২০১৯ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ৮টি ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ১০টি পুরস্কার জিতেছে মাসুদ পথিকের সিনেমা ‘মায়া: দ্য লস্ট মাদার’।এর মধ্যে- সেরা সংগীত পরিচালক, সেরা সুরকার, সেরা গায়িকা, সেরা গীতিকার, সেরা কাহিনিকারসহ মোট ১০টি পুরস্কার।
সর্বোচ্চ পুরস্কার জিতেও দুঃখ প্রকাশ করলেন নির্মাতা। জানালেন তার আক্ষেপের কথা। বললেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মূল্যায়নে সন্তোষ নই আমি। ’
এ বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন মাসুদ পথিক। সেখানে লেখেন, ‘সাম্প্রতিক সময়টাই আমার জন্য কুফা। একে তো বাবা মারা গেলেন বিনা নোটিশে। আর আজকের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের নিউজটিও আমার জন্য অবমূল্যায়নের। আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার পদকটি বিনীতভাবে গ্রহণ না করার কথা ভাবছি। তবে আমি ছাড়া এই সিনেমা থেকে আরও যে ৯ জন জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন, তাদের অভিনন্দন রইলো। জানি, প্রকৃত শিল্পের পথ মসৃণ নয়। সবাই ক্ষমা করবেন আমাকে।
কীভাবে অবমূল্যায়ন হলেন সেই ব্যাখ্যাও বাংলানিউজকে দিলেন নির্মাতা। বললেন, ‘১০টি পুরস্কার জিতেছে ‘মায়া’। তার মানে সিনেমাটি অবশ্য ভালো। তাহলে সেরা পরিচালক আর সেরা সিনেমা ক্যাটাগরি দুটো কেন নয়? সার্বিকভাবে ভালো সিনেমার মাথাটা ভালো, পা ভালো হয়নি- তা তো আসলে হয় না। আমি গ্লানি অনুভব করছি। আমি কারও দিকে আঙুল তুলছি না। কারও প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নেই। ’
মাসুদ পথিক আরও বলেন, ‘আমার সিনেমাটি ১৭টা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমন্ত্রিত হয়েছে। ৫টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। সেরা সিনেমা ও সেরা পরিচালক রেখে সেরা কাহিনিকারের পুরস্কার ধরিয়ে দেওয়া আমার জন্য অবমূল্যায়নের। ’
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম ‘ওমেন’ এবং কবি কামাল চৌধুরীর ‘যুদ্ধশিশু’ কবিতা অবলম্বনে ‘মায়া- দ্য লস্ট মাদার’ পরিচালনার পাশাপাশি এর চিত্রনাট্যও তৈরি করেন মাসুদ পথিক।
সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন- মুমতাজ সরকার (ভারত), প্রাণ রায়, জ্যোতিকা জ্যোতি, দেবাশিষ কায়সার, সৈয়দ হাসান ইমাম, ঝুনা চৌধুরী, নারগিস আক্তার, লীনা ফেরদৌসী, ড. শাহাদাত হোসেন নিপু, আসলাম সানী ও মজিদ প্রমুখ।ব্রাত্য ক্রিয়েশন প্রযোজিত এই সিনেমাটিতে গান করেছেন- ইমন চৌধুরী, বেলাল খান, কোনাল, ঐশী, পূজা ও মমতাজ।
২০১৬ সালে ‘মায়া- দ্য লস্ট মাদার’ নির্মাণের জন্য সরকারি অনুদান পায়। সে বছরই সিনেমাটির কাজ শুরু হয়। এর কাজ সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে তিন বছর। এরপর গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে আসে এই সিনেমা।
এর আগেও ২০১৪ সালে মাসুদ পথিকের ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ৬টি পুরস্কার ঘরে তুলেছিল। সে বছর সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতেছিলেন নির্মাতা। কিন্তু এবার সেটি পাননি।